একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের আপিলেও মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন আদালত।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৬ মিনিটে এ রায় দেন।
বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বুদ্ধিজীবী হত্যা এবং সাম্প্রদায়িক হত্যা-নির্যাতনের দায়ে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
প্রসিকিউশনের আনা সাতটি অভিযোগের মধ্যে প্রথম অভিযোগে সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনকে অপরণের পর হত্যা এবং ষষ্ঠ অভিযোগে বুদ্ধিজীবীসহ গণহত্যার ষড়যন্ত্র ও ইন্ধনের অভিযোগে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে ওই দণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছিল বিচারিক আদালত।
একই রায় এসেছিল সপ্তম অভিযোগে, ফরিদপুরের বকচর গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর বর্বর হামলা চালিয়ে হত্যা-নিযার্তনের ঘটনায়।
আপিল বিভাগের রায়ে প্রথম অভিযোগে আসামির আপিল মঞ্জুর করে তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে। সপ্তাম অভিযোগে তার সাজা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
আর ষষ্ঠ অভিযোগে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রেখে মুজাহিদের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
পঞ্চম অভিযোগে সুরকার আলতাফ মাহমুদ, গেরিলা যোদ্ধা জহিরউদ্দিন জালাল ওরফে বিচ্ছু জালাল, শহীদজননী জাহানারা ইমামের ছেলে শাফি ইমাম রুমি, বদিউজ্জামান, আবদুল হালিম চৌধুরী জুয়েল ও মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদসহ কয়েকজনকে ঢাকার নাখালপাড়ায় পুরনো এমপি হোস্টেলে আটকে রেখে নির্যাতন এবং জালাল ছাড়া বাকিদের হত্যার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার জন্য ট্রাইব্যুনালে মুজাহিদকে দেয়া হয়েছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আপিল বিভাগের রায়ে সেই সাজাই বহাল রাখা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের রায়ে তৃতীয় অভিযোগে ফরিদপুর শহরের খাবাসপুরের রণজিৎ নাথকে অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় মুজাহিদকে। ওই সাজা তার প্রাপ্য বলে আপিল বিভাগও মনে করেছে।
এছাড়া দ্বিতীয় অভিযোগে ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে হিন্দু গ্রামে গণহত্যা এবং চতুর্থ অভিযোগে আলফাডাঙ্গার আবু ইউসুফ ওরফে পাখিকে আটকে রেখে নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলেও তাতে মুজাহিদের সংশ্লিষ্টতা প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে না পারায় ট্রাইব্যুনাল মুজাহিদকে খালাস দিয়েছিল। এ কারণে এ দুটি অভিযোগ আপিল বিভাগের রায়ে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।
২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিতদের মধ্যে মুজাহিদ হলেন চতুর্থ ব্যক্তি, আপিল বিভাগে যার মামলার নিষ্পত্তি হল।





















