আমাদের প্রত্যেকের জীবন থেকে চলে গেল আরেকটি আনন্দালোকের মধুর সময়। সেই রজব শাবান থেকে মহামহিমান্বিত রমজান, শবেকদর ও পবিত্র ঈদুল ফিতর। কী রহমত, বরকত, ক্ষমা-করুণা, নাজাত ও মাগফিরাতের ঢেউ। কী আবেগ উচ্ছ্বাস আনন্দাশ্রু আর হৃদয়নিংড়ানো নিবেদনের মওসুম। কেমন ছায়া, কেমন মায়া, কী শীতলতা, কত অনুকম্পার ভরা বর্ষা। শবে মিরাজ, নিসফে শাবান, শবে বরাত, সিয়াম ও কিয়াম, তিলওয়াত, তারাবীহ, সাহরি, ইফতার, সাদাকা ও ইতেকাফ পালন করে, তাকবীরের উদ্দীপনায় প্রেমপুণ্য পরিচয় ও পরিপূরণের ঈদ। হে আল্লাহ তুমি আমাদের মঙ্গলে পূর্ণ করে দাও, রজব ও শাবানকে ভরে দাও, বরকত ও ঋদ্ধিতে। আমাদের হায়াত দারাজ করে পৌঁছে দাও, পবিত্র মাস রমজানের দ্বারপ্রান্তে। এ দোয়াটি নবী করিম (সা.)-এর। বলেছেন, রমজানের শেষ দশকে খোঁজো কদরের রাত। এ রাতের নাগাল যে পাবে তার অতীত গোনাহ মাফ। হাজার মাসের সেরা এ রাত মুক্তির পয়গাম। সামনে আসছে হজ ও কোরবানী। এরপর মহররম। আশুরার পর সৌভাগ্যের পরম বার্তাবহ রবিউল আউয়াল। আবার একটু দম নিয়েই বছরের চাকা ঘুরে গিয়ে স্পর্শ করবে নতুন রজব শাবান। আরেকটি রমজান। জানা নেই, কারা কারা পাবে সে নতুন বাঁকা চাঁদ। জীবনের ডায়েরির পাতায় আরেকটি রমজান।গত পাঁচ বছর ধরে, কী এক কুদরত দেখে চলেছি আল্লাহ ও রাসূল (সা.)-এর আশিসধন্য পবিত্র স্বদেশ বাংলাদেশে। জুন, জুলাই ও আগস্টের ভ্যাপসা গরম, তাপদাহ, খররোদ্র আর বিদঘুটে আবহাওয়ায় যেই রমজান আসে শুরু হয় ছায়া ঢাকা শীতল আবহে স্বস্তির মরুদ্যান। একটি মাস যেন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশ। আবার ঈদ শেষে যেই সেই। রমজান শরীফে বাংলাদেশের আকাশ-বাতাস যে রহমত ও স্বস্তিতে ভরে যায়, এটি প্রত্যক্ষ করে কোটি কোটি মানুষ আল্লাহ ও রাসূল (সা.)-এর দিকে ঝুঁকে পড়ে। নামাজির সংখ্যা শতগুণ বৃদ্ধি পায়, বাড়ে রোজাদার ও পরহেজগারের পরিমাণ। উপচে পড়ে লাখো মসজিদ। তারাবীহ, জুমা ও কিয়ামুল্লাইলে নামে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার ঢল। দোয়া, মোনাজাত, জিকির, তওবা, প্রার্থনা, ফরিয়াদ, কান্না ও রোনাজারির বেহেশতি আবহ সৌরভে ভরে দেয় বাংলার আকাশ-বাতাস। কী অপূর্ব এ বাংলা, কত গভীর এর আস্থা ও বিশ্বাস। কত ব্যাপক এখানে ঈমান, আমল ও ইহসান। কী কঠিন মায়ার চাদর বিছিয়েছেন আল্লাহ এ দেশের মানুষের অন্তরে। কতই না শক্ত তাদের বাঁধন প্রিয় নবীজির (সা.) ভালোবাসার ডোরে।বাংলাদেশের সাথে আল্লাহ ও রাসূলের (সা.) মহান আনুগত্যের সম্পর্ক নিয়ে কথা বললেই মনে পড়ে আমাদের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কথা। তিনিই তো বলেছেন, এ কোন মধুর শরাব দিলে আল আরাবী সাকী। নেশায় হলাম দিওয়ানা যে রঙিন হলো আঁখি। …আল কোরআনে সবক দিলে শবে কদর রাতে। নর-নারী, বাদশাহ-ফকির সেই জামাতে হলো শামিল। যা ছিল নজরানা দিল রাঙা পায়ে রাখি। এ কোন মধুর…। ইসলাম ও ঈমানের বন্ধন, কোরআন সুন্নাহ, রমজান ও শবে কদরের মায়া আর এলো খুশীর ঈদের ছায়া যে এই বাংলায় দেড়হাজার বছর ধরেই বিস্তৃত তা কাজী […]





Posted in
















